কিভাবে জিডি (সাধারণ ডায়েরী) করবেন
GD in Bangla Format
জিডি (সাধারণ ডায়রি) ফরম্যাট বাংলা
সাধারণত কোন অপরাধ সংগঠিত হবার পূর্বে ফৌজদারি মামলা করা যায় না। কিন্তু বিভিন্ন সময় মানুষ তার জীবন ও সম্পদ নিয়ে হুমকির সম্মুখীন হয়। আশংকা বোধ করে। এরকম কিছু ঘটলে যে কোন নাগরিক থানায় জিডি করতে পারবে। জিডি অর্থ General Diary বা সাধারণ ডায়রি।
জিডি কেন করা হয়?
জিডি হলো একটি থানার চলমান আইনি চিত্ররূপ। বিভিন্ন কারণে জিডি করা হয়। থানায় মামলাযোগ্য নয় এমন ঘটনা ঘটলে বা কাউকে ভয়-ভীতি দেখানো হলে বা জীবন বা সম্পত্তির নিরাপত্তার অভাব বোধ করলে, কিংবা কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের আশঙ্কা থাকলে, ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য জিডি করা হয়।
জিডির আবেদন কিভাবে করতে হয়?
নিকটস্থ থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট জিডির আবেদন করতে হয়। সাধারণত থানায় জিডি করার জন্য আলাদা ফরম থাকে। এছাড়া আপনি সাদা কাগজে নির্দিষ্ট নিয়মে জিডির কপি লিখতে পারবেন।
সকলের সুবিধার্তে নিম্নে কিছু জিডি ফরম্যাট দেওয়া হলো
হুমকি জিডি ফরম্যাট
বিষয় : জিডি এন্ট্রি প্রসঙ্গে।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী ..................., পিতা- ..................., সাং-........................। আপনার থানায় উপস্থিত হয়ে এ মর্মে একটি অভিযোগ দায়ের করছি যে, আমি ০০ বছর ধরে .................... থানায় বসবাস করছি। আমার পাশের বাসায় ..................., পিতা- ................, সাং-................,থানা- .................... ,জেলা- ......................., বর্তমান ঠিকানা- থানা- .................., জেলা- ................... বসবাস করে। সে একজন ---- । সে বিভিন্ন ভাবে আমাকে হুমকির কারণ বর্ণণা করবেন এবং বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদর্শন করছে। সর্বশেষ গত এই ইং তারিখে বিকাল আনুমানিক ০.০০ ঘটিকার সময় উক্ত আকখগঘ সঙ্গী সহ আমার বাসস্থানে এসে আমাকে এ মর্মে হুমকি প্রদর্শন করে যে, “যা বলেছে অই ব্যাক্তি”। যাওয়ার সময় সে আমার বাসার কিছু জিনিসপত্র ভেঙে যায়। ফলে, আমি আমার জীবন ও সম্পদের ক্ষতির আশংকা করছি।
অতএব,বিনীত নিবেদন এই যে, উক্ত অবস্থাধীনে, আমার জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে উক্ত জিডি এন্ট্রি করে বাধিত করবেন।
হারিয়ে গেলে জিডি ফরম্যাট
বিষয় : জিডি এন্ট্রি প্রসঙ্গে।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী ..............., পিতা- ..............., সাং- ..............., থানা- ..............., জেলা- ..............., বর্তমানে-..............., থানা, ..............., আপনার থানায় উপস্থিত হয়ে এ মর্মে একটি অভিযোগ দায়ের করছি যে, আমি একজন আপনার পরিচয় । আজ তারিখ ইং তারিখে সকাল আনুমানিক (সময়) ঘটিকার সময় (আপনার যা হারিয়েছে তার বিবরণ, কিভাবে হারিয়েছে, সম্ভব্য কোথায় হারাতে পারে)
অতএব,বিনীত নিবেদন এই যে, আপনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে উক্ত জিডি এন্ট্রি করে বাধিত করবেন।
সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করবেন কিভাবে?
পথ চলতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থানায় জিডি বা সাধারণ ডায়েরি করার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু এ সম্পর্কে অনেকেরই পরিষ্কার ধারণা না থাকায় নানা ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই বা হুমকির শিকার কিংবা যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য পুলিশের সহায়তা চেয়ে থানায় জিডি করা যেতে পারে। কেউ হারিয়ে অথবা পালিয়ে গেলেও থানায় জিডি করা দরকার। এছাড়াও অনেক সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্টসহ অন্যান্য দরকারী নথি) হারিয়ে গেলে তা নতুন করে পেতেও থানায় জিডি করার প্রয়োজন পড়ে।
জিডির সুবিধা:
- যে কোন সমস্যায় পুলিশের সাহায্য পাওয়া যায়
- নাগরিক সেবা নিশ্চিত হয়
- নাগরিকের জান-মালের রক্ষা নিশ্চিৎ করা
- কোন কাগজপত্র হারিয়ে গেলে এর কপি তুলতে জিডি করতে হয়
- কোন মালপত্র হারিয়ে গেলে জিডি করতে হয়
- কেউ নিখোঁজ হলে জিডি করতে হয়
জিডি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য
জিডিতে কী কী উল্লেখ করতে হবে
জিডি করতে হলে প্রথমে একটি সাদা কাগজে দরখাস্ত লিখতে হবে। এ দরখাস্তের সাধারণ দরখাস্তের মতোই।
১. দরখাস্ত করতে হবে সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর। নিচে থাকবে থানা ও জেলার নাম।
২. বিষয় হিসেবে উল্লেখ করতে হবে যে ব্যাপারে জিডি করতে চান তার নাম। দরখাস্তের মূল বা ভেতরের অংশে কী কারণে জিডি করবেন তা বিস্তারিত বর্ণনা করতে হবে।
৩. অপরাধ হবার আশঙ্কা থাকলে অবশ্যই আপনাকে আশঙ্কার কারণ, যার জন্য আপনি আতঙ্কিত তার নাম, ঠিকানা, হুমকির স্থান, তারিখ উল্লেখ করতে হবে।
৪. হুমকি দিলে হুমকি দাতার নাম, স্থান, সাক্ষী, পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে। এক্ষেত্রে ঘটনার তারিখ, সময় ও স্থান উল্লেখ করা খুবই জরুরি।
৫. কিছু হারিয়ে গেলেও সেটার বিস্তারিত বিবরণ এবং পারলে তার কোনো নমুনা, যেমন ছবি দরখাস্তের সঙ্গে সংযুক্ত করবেন।
৬. ডায়েরি নথিভুক্ত করে বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ কারার জন্য আবেদন করতে হবে।
৭. যদি কোনো বিষয়ে এখনই কোনো মামলা না করতে চান, তাহলে জিডিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে দিতে হবে যে এ বিষয়ে আপাতত কোনো মামলা করবেন না। তবে মনে রাখবেন, পুলিশ যদি মনে করে যে কোনো মারাত্মক অপরাধ ঘটছে, তাহলে জিডি থেকেও মামলা হতে পারে।
৮.দরখাস্তের সর্বশেষে জিডির আবেদনকারীর নাম, পিতা-মাতার নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা প্রয়োজনে ফোন নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
৯. জিডির দুই কপি করে স্বাক্ষর দিয়ে জিডির কপি থানায় ডিউটি অফিসারের নিকট জমা দিতে হবে। ডিউটি অফিসার থানায় নির্দিষ্ট নথিতে জিডিটি তালিকাভুক্ত করে জিডির কপিতে সিল, স্বাক্ষর, তারিখ ও জিডি নম্বরসহ এক কপি আবেদনকারীকে দেবেন। পুরো প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত জিডি গণ্য হবে না।
0 Comments